
দেলোয়ার জাহানঃ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করা হয়, তাহলে প্রশ্ন আসে, এতদিন পরে কেন? কারণ মাঝে মাঝে অনেক সঠিক সিদ্ধান্তও টাইমিং এর কারণে ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। দেশে চলমান আন্দোলনের মাঝে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে আন্দোলনকারীদের উপর আরো বেশি চড়াও হওয়ার একটা উপলক্ষ তৈরী ছাড়া আর কিছুই না।
জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
এই মুহূর্তে জামাত শিবির নিষিদ্ধ করা মানে আন্দোলনে রাস্তায় থাকা ভাইবোন বাবা মা শিক্ষক ছাত্র যাকে তাকে ধরে ধরে জামাত শিবির ট্যাগ দিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কঠিন বিচার করা। তার মানে, আজকের পর থেকে জামাতে ইসলামীর সদস্য হলেই ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড, কোন কার্যক্রম দ্বারা জামায়াতে ইসলামী কে সমর্থন করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জামায়াতে ইসলামীর কোন সদস্যকে আশ্রয় দিলেও শাস্তি হতে পারে।
এখন কথা হলো, প্রজ্ঞাপন করে শিবির নিষিদ্ধ করার আগেও এদেরকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে। আর বাংলাদেশের দাড়ি টুপি ওয়ালা যে কাউকে জামাত ট্যাগ দিয়ে মামলা, জেল জুলুম চলেছে।
রাতুল মুহাম্মদ বলছেন, এই নিষিদ্ধ করার পর আমেরিকা জামাতের পাশে দাঁড়ালে বোঝা যাবে আমেরিকা আমাদের প্রতি তার ইন্টারেস্ট হারায়নি। আর যদি দেখা যায় ওরা কোন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না, তাহলে ধরে নেওয়া যায় এই পবিত্র ভূখণ্ড ভারতকে তারা বর্গা দিয়া দিছে।
কিন্তু আমার প্রশ্ন, নিষিদ্ধকরণের আজকের এই যে প্রজ্ঞাপন, সেটা যদি আমেরিকা-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়ে থাকে, তাহলে সম্ভবত জামাত শিবিরের ভাগ্য তাদের নিজেদের গড়ে নেওয়া ছাড়া অন্য পথ নাই। আর এই পথটা, সবাই জানে, ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী ব্যাপার।
কিন্তু আশংকা হয় যে, জামায়াত শিবিরের নিজের ভাগ্য বলতে তখন কিছু থাকবে না। তারা নিষিদ্ধ হলে আওয়ামী লীগ আর ছাত্রলীগ ছাড়া সারা বাংলাদেশের জনগণই কার্যত নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।
নিরস্ত্র নিরীহ ছাত্ররা যখন কোটাব্যবস্থার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, তাদের উপর ভয়ানক নিপীড়ন গণহত্যা চালানো হচ্ছে। জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে। আজকে যখন এই গনহ'ত্যার দিনে মায়ের পেটের শিশুও তার মায়ের পেটে নিরাপদ না, বারান্দায় গু'লি খেয়ে ঘরে ঘরে শিশু নিহত হচ্ছে এই করুণ সময়ে যারা পচাত্তুর নিয়ে শোক করতেছে, আমি অনুরোধ করি আপনার শিশু পুত্রের লেখার খাতায় তাদের নাম গুলা টুকে রাখুন। এরা আপনার সন্তানকেও হত্যা করার মঞ্চ প্রস্তুত করছে। এরা সব বিকৃত মস্তিষ্ক সাইকো কিলার।
জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন এমন এক সময়ে করা হলো যখন আওয়ামী লীগের নিজেদেরই অস্তিত্ব সংকটে। তাই হয়তো ভাবছে, মরলে একা মরবো না, জামাতকে নিয়েই মরবো! কিন্তু এটাই নিজেদের কফিনে শেষ পেরেক কিনা সেটা সময় বলে দিবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: