
যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ভেরিয়্যান্ট, ফ্লু ও আর, এসভি (রেসপিরেটরি সিনসেশাল ভাইরাস) এর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও মাস্ক পরার আহবান জানিয়েছেন সিটির স্বাস্থ্য বিভাগের কমকর্তারা। নিউইয়র্ক সিটির বাসিন্দাদের ইনডোরে এবং জনভারাক্রান্ত স্থানে উচ্চ মানের মাস্ক পরিধানের নির্দেশ দেন নগর কর্তৃপক্ষ।
সিটির স্বাস্থ বিভাগ জানান স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক মাত্রায় উপরোক্ত ভাইরাসের বিস্তারে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সিটির হেলথ কমিশনার ডা: অশ্বিন ভাসান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সিটিবাসীকে ইনডোর ও ভিড়পূর্ণ স্থানে, অফিস, স্কুল, গণপরিবহনে সারাক্ষণ মাস্ক পরিধানের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা এমনকি কোভিড ও ফ্লু’র জন্য ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাদেরও মাস্ক পরিধানের আবশ্যকতা রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আরো বলা হয়েছে যে, যদি কোভিড এখন আর আমাদের জীবনে শঙ্কা সৃষ্টির প্রধান কারণ হিসেবে ভূমিকা পালন করছে না, কিন্তু কোভিড এবং অন্যান্য ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যে, চলতি শীত মওসুমে ভাইরাস সংক্রমণ জনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঘটনা বাড়তে পারে এবং ইতোমধ্যে তা বেড়েছে। বিগত দুই সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই থ্যাঙ্কসগিভিং এর পর এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা, যা থ্যাঙ্কসগিভিং এর পর থেকে শুরু হয়ে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রলম্বিত হয়ে মানুষের প্রধান স্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়।
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভনশন সূত্রে বলা হয়েছে যে সমগ্র আমেরিকার অধিকাংশ স্টেটে ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অধিক, যা সাংবাৎসরিক হারের চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমানে হাসপাতালে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছে, তাদের ফ্লু ও সংশ্লিষ্ট ব্যাধিতে আক্রান্তরাই অধিক এবং সিডিসি’র পরিচালক রচেল ওয়ালেস্কি বলেছেন, ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর এস ভি’তে আক্রান্ত হয়েও অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, তবে সে সংখ্যা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। আরএসভি’তে আক্রান্তরা ঠাণ্ডার সঙ্গে জড়িত রোগব্যাধির মতো লক্ষণে ভুগলেও অনেক ক্ষেত্রে তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠতে পারে বলে সিডিসি আরএসভি আক্রান্ততের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
কাইজার ফ্যামিলি ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো ডা: সেলিন গোন্ডার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রামক ব্যাধির বর্তমান যে চিত্র, তাতে একথা বলা যায় না যে কোভিড বিদায় নিচ্ছে, বরং এটি হেমন্ত ও শীত মওসুমে ঠান্ডাজনিত শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার পাশাপাশি কোভিডের রয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমনকি কোনো কোনো বছর কোভিড সংক্রমণ বাজে মোড় নিতে পারে। এসব নিয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে সতর্কতা অবলম্বন করে। সেজন্য যারা এখনো কোভিড ভ্যাকসিন দেননি, এবং বুস্টার ডোজগুলো নেননি, তাদের উচিত ভ্যাকসিন গ্রহণ করা এবং ঝুঁকি হ্রাস করা। কারণ এ ঝুঁকি শুধু একজন ব্যক্তির নয়, বরং সমষ্টির। উল্লিখিত ভাইরাসগুলো যেহেতু দ্রুত সংক্রমিত হয়, সেজন্য ইনডোর ও ভিড়ের স্থানে সকলের জন্য মাস্ক ধারণ করা জরুরী বলে বিবেচনা করছে সিডিসি। তাছাড়া কেউ যদি ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে তার উচিত নিজে বিচ্ছিন্ন রেখে ভাইরাস ছড়ানো এড়িয়ে চলা এবং হাসপাতালে ভর্তি না হতে অথবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্যাক্সোলেভিডের জন্য প্রেসক্রিপশন নেয়া।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: