ঢাকা | শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

ভাঙ্গা নয় আমাদের গড়ার প্রকল্প হাতে নেয়া উচিত: মাহফুজ আলম

এ আর লিমন | প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৪

এ আর লিমন
প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৪

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কেবল ভাঙার রাজনীতি নয়, এখন সময় শক্তিশালী রাষ্ট্রকল্প, দক্ষ মানবসম্পদ এবং টেকসই প্রতিষ্ঠান তৈরির মাধ্যমে বিকল্প হেজেমনি গড়ে তোলার।

মাহফুজ আলমের ভেরিফাইড ফেসবুকে দেয়া পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:

“গড়ার তাকত আছে আমাদের?  

আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আধিপত্যবাদ মোকাবেলা করছি। নিছক কিছু মূর্তি বা দালান নয়। মূর্তি ( idols) না ভেঙ্গে আমাদের উচিত আমাদের শত্রুদের শক্তির বিপরীতে পাল্টা চিন্তা (Ideals), শক্তি ও হেজেমনি গড়ে তোলা। ভাঙ্গার প্রকল্প থেকে সরে এসে দিনকে দিন আমাদের গড়ার প্রকল্প হাতে নেয়া উচিত। 

লীগ বা হাসিনা সে অর্থে কিছুই না, বরং আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের এক্সটেনশন। আর, আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ তার হেজেমনি তৈরি করছে বাস্তবধর্মী রাষ্ট্রকল্পনা, দেশে এবং ডায়াসপোরায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি  এবং রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে। আমাদের পালটা হেজেমনিও এ তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। 

ভাঙ্গার পরে গড়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু অনন্ত ভাঙ্গা প্রকল্প আমাদের জন্য ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবহ না। গড়ার প্রকল্পগুলো খুব দ্রুতই শুরু ও বাস্তবায়ন হবে। আপনারা গড়ার কাজে সক্রিয় হোন। 

সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন শীঘ্রই শুরু হবে। আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন ও জুলাই গণহত্যার বিচারের কাজ ও চলমান। এ মাসেই এ কাজগুলো আরো গতি পাবে। 

ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ নিছক ভাঙ্গা নয়, বরং বিকল্প গড়ারও লড়াই। নূতন বন্দোবস্তে আমরা ভাঙ্গার চেয়ে গড়ার দিকে গুরুত্ব দিতে চাই। 

পুনশ্চ: খুনী হাসিনার বক্তব্য প্রচার এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সব রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী থাকবে আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ। এজন্যই আমাদের উচিত, সৃজনশীল শক্তির বিকাশ ঘটানো এবং সার্বিকভাবে এ আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে দূরদর্শী পদ্ধতি নেয়া। কারণ, এ লড়াই মাত্র শুরু হল। অন্তত, এক দশক পরে এ লড়াইয়ের একটা মীমাংসা হয়ত হবে। অথচ, সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি সামান্যই। 

রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা - নেতিবাচক এনার্জি, কিন্তু অভ্যুত্থানের পর আমাদের এ সকল এনার্জিকে ইতিবাচক রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। এখনো সে সুযোগ হারিয়ে যায়নি। আগামী অন্তত এক দশকব্যাপী দীর্ঘ গণতান্ত্রিক ও আধিপত্যবাদ-বিরোধী লড়াইয়ের জন্য আমাদের সৃজনশীল  শক্তিকে কাজে লাগানো দরকার। 

ভবিষ্যতপানে তাকান, ইতিহাস আমাদের সুযোগ দিয়েছে। আমাদের এবার জিততেই হবে আর জেতার উপায় একটাই- রাষ্ট্রকল্প, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ও  দক্ষ ও মর্যাদাবান মানবসম্পদ গড়ে তোলা। 
আল্লাহ আমাদের ফেরাসত তথা দূরদৃষ্টি দিক। ”

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: