
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) থেকে : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় জোড়া খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের আওতায় এনে ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
শনিবার (২১ মে) বেলা ১১টায় জান্দি রেলরাস্তার উপর মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভকারীরা ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় ঘন্টা সময় অবরোধ করে রাখেন।
মানববন্ধন থেকে নিহত কামরুলের বৃদ্ধা মা নিলুফা বেগম বলেন, আমার পেটের ছেলেকে জামাল, আলতাফ, বালা গংরা কুপিয়ে হত্যা করল আমি ওদের ফাঁসি চাই।
এদিকে আরেক নিহত ছলেমান শরীফের বৃদ্ধা মা মজিরন নেছা বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমার ছেলের রোজগারেই সংসার চলত আমার ছেলেকে সন্ত্রাসী জামাল মাতুব্বর তার দলবল নিয়ে বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে খুন করেছে। আমি ওদের ফাঁসি চাই।
এলাকাবাসীর পক্ষে তুজারপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম খাঁ বলেন, আসামীরা দুইটা খুন করেও তারা হুমকি দিতেছে মামলা উঠিয়ে নিতে। তারা উল্টা লুট, চাঁদাবাজীর মিথ্যা মামলা দিয়ে বাদী পক্ষের লোকদের হয়রানী করছে। পুলিশ আসামী ধরছে না। আমরা আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানাই।
অন্যদিকে পিকুল মোল্লা বলেন, আমরা জান্দিবাসী আশ্চার্যবোধ করছি যেখানে দুই দুইটা মাডার করল এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী জামাল, কামাল, আলতাফ, বালা গংরা অথচঃ আসামীদের পুলিশ গ্রেপ্তার না করে আসামী পক্ষের কাউন্টার মামলায় বাদী পক্ষের লোকজনকে হয়রানী করছে এরা ঘরে থাকতে পারছে না। আমরা পুলিশের কর্মকান্ডের প্রতি সন্দেহ পোষন করছি। আমরা এলাকাবাসী মাননীয় আইজিপি, ডিআইজি ও এসপি মহোদয়ের নজরদারী কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি।
প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে আরো বক্তব্য দেন, নিহত কামরুলে স্ত্রী নিপা বেগম, আরেক নিহত ছলেমানের স্ত্রী আমিরন বেগম, নিহতের ভাই বাদী রুবেল মাতুব্বর, প্রতক্ষ্যদর্শী অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া আমিনুল, মুক্তিযোদ্ধা আজাহার মোল্লা,মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক শেখ, শহীদ মেম্বার, রফিক বেপারী, ছিকু মিয়া প্রমূখ।
মানববন্ধন শেষে শত শত বিক্ষোভকারী বিভিন্ন প্রকার ব্যানার, ফেস্টুন ও আসামীদের ফাঁসি সংবলিত ছবি নিয়ে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে অবস্থান করে প্রায় ঘন্টা সময় ব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখেন এবং শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শত শত গাড়ী দুই পাশে জমা পড়ে। তখন খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
প্রসঙ্গঃ গত মাসের ৭ই এপ্রিল রাত ৯টার সময় উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের প্রতিপক্ষরা দলনেতা কামরুল মাতুব্বর (৩০) ও ছলেমান শরীফ (৩৯) কে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। অল্পের জন্য বেঁচে যান সঙ্গে থাকা প্রতক্ষ্যদর্শী আমিনুল। খুনের দুই দিন পরে নিহতের ভাই রুবেল বাদী হয়ে জামাল মাতুব্বর, মনির হোসেন বালা ও আলতাফ মাতুব্বরতে প্রধান করে ১৯জনকে আসামী করে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে হত্যা মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার (উপ-পরিদর্শক) এসআই সুমন বলেন, আমি মামলার দায়িত্ব পেয়ে ইজাহার ভুক্ত দুই জন ও সন্দিহান আরো তিনসহ মোট পাঁচ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে এক জন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি দিয়েছে। আমার পরে মামলাটির দায়িত্ব তদন্ত স্যারের উপর দিয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: