ঢাকা | শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব

মো: মনিরুল ইসলাম | প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২৩ ১৯:২৫

মো: মনিরুল ইসলাম
প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০২৩ ১৯:২৫

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বিরোধী দলগুলো। কংগ্রেসের সংসদ সদস্য গৌরব গগৈ অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কের সূচনা করেন। ২৬ জুলাই বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে তিনিই প্রস্তাবটি এনেছিলেন। খবর বিবিসির।

বৃহস্পতিবার বিতর্ক শেষে লোকসভার সদস্যরা প্রস্তাবটির ওপর ভোট দেবেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

অবশ্য এই অনাস্থা ভোট নিয়ে মোদি সরকারের তেমন আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে বিবিসি জানিয়েছে। কারণ সংসদে মোদির নেতৃত্বাধীন জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাই অনাস্থা ভোটে মোদির গদি হারানোর আশঙ্কা একেবারেই নেই।

বিরোধী দলও ভালো করেই বিষয়টি জানে। কিন্তু তার পরও তারা মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। তাদের দাবি, এই বিতর্ক মণিপুর রাজ্যে চলমান জাতিগত দাঙ্গা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে মুখ খুলতে বাধ্য করবে।

লোকসভায় গগৈ বলেন, মণিপুরের বিষয়ে ‘মোদির নীরবতা ভাঙতে’ বিরোধীরা এ অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। মোদি এখনো দাঙ্গাকবলিত রাজ্যটি পরিদর্শন করতে যাননি কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

ভারতীয় পার্লামেন্টের চলতি অধিবেশন ২০ জুলাই শুরু হয়েছে। অধিবেশন শুরুর পর থেকেই বিরোধীরা মণিপুরের সহিংসতা নিয়ে মোদির বিবৃতির দাবি করতে থাকেন। এ নিয়ে বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে বারবার অধিবেশন বিঘ্নিত হয়।

মে মাসের প্রথম দিক থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে শুরু হওয়া জাতিগত দাঙ্গায় এ পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। রাজ্যটির সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতি মেইতেইদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকিদের সংঘর্ষ চলছে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, তাদের সরকার এই ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য তৈরি আছে।

বিঘ্নিত অধিবেশনের মধ্যেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হয়, যেগুলো নিয়ে সামান্য বিতর্ক ও কিছু প্রতিবাদ দেখা গেছে।

মোদি পদবি নিয়ে মানহানির মামলায় সুরাটের আদালতের রায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীর। এ কারণে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে লোকসভার সদস্যপদ হারিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ওই রায় স্থগিত করায় রোববার সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন তিনি। তারপর সোমবারই লোকসভার অধিবেশনে যোগ দেন তিনি।

অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কে বিরোধীদের পক্ষ থেকে রাহুলই প্রথম বক্তৃতা শুরু করবেন বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কৌশল বদল করলেন বিরোধীরা। রাহুলের বদলে তার দলের গৌরব গগৈ বক্তৃতা শুরু করেন। এই নিয়ে কিছুটা হইচই করেছিলেন লোকসভার বিজেপির সদস্যরা।

আগামী বৃহস্পতিবার বিতর্কের শেষ দিনে জবাবি বক্তৃতা দেবেন মোদি। ওই দিন রাহুলেরও বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে।

২০১৪ সালে ভারতের শাসনক্ষমতায় আসার পর ২০১৮ সালে মাত্র একবারই অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হয়েছিল মোদি সরকার। ২০১৮ সালে মোদির বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ১৯৯ ভোটে জয়ী হয় তার দল।

ভারতের সংসদে এর আগে মোট ২৭ বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। নেহেরু থেকে মোদি- সবার বিরুদ্ধেই এসেছে এই প্রস্তাব। সবচেয়ে বেশি ১৫ বার অনাস্থা প্রস্তাব এসেছে ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে। প্রতিবারই তিনি জয়ী হয়েছেন। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, নরসিমা রাওয়ের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এসেছে তিনবার করে। তারাও জয়ী হয়েছেন। তবে অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে সরকার খোয়ানোর ইতিহাসও আছে। মোরারজি দেশাই, চরণ সিং, ভিপি সিংদের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় আস্থা ভোটে হেরেই। ১৯৯৯ সালে মাত্র ১ ভোটে অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে পদত্যাগ করতে হয় অটল বিহারি বাজপেয়িকে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: