ঢাকা | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ [email protected] +৮৮ ০১৬৮২ ৫৬ ১০ ২৮, +৮৮ ০১৬১১ ০২ ৯৯ ৩৩

আয়নাঘরে বন্দি করে জঙ্গি নাটক বানিয়েছে: জামায়াত আমীর

সেলিম সোহেল | প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:১৯

সেলিম সোহেল
প্রকাশিত: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:১৯

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের শাসন আমলে ১৫ বছর মানুষকে বন্দি করে জঙ্গি নাটক করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘গত ১৫ বছরে অসংখ্য মায়ের বুক খালি হয়েছে। আয়না ঘরে বন্দি রেখে জঙ্গিবাদের নাটক করা হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে বিনাবিচারে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে।’’ 

আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচনের নামে বিনাভোটে এমপিদের পাস করানো হয়েছে। নিশিরাতে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন হয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের দেশপ্রেমিক বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করে সীমান্ত চৌকিদার বিজিবি করেছে।’’

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার কর্মী (রোকন) সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘অফিস-আদালত থেকে ঘুষ-দুর্নীতি নির্মূল করতে হবে। চাঁদাবাজি, দখলদারি বন্ধ করতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্যের, বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন। সকল ক্ষেত্র থেকে বৈষম্য দূর করতে হবে, যেখানে সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘুর ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকবে না। সব মানুষই দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচিত হবে। ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বিভাজন করা হবে না। মসজিদ যদি পাহারা দেওয়া না লাগে তবে মন্দিরও পাহারা দেওয়া লাগবে না। সকলেই শান্তিতে সহাবস্থান করবে।’’

তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, অত্যাচার, বাড়িঘর লুটপাটের আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কেউ নারীদের ইজ্জতকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। তাদের পূর্ণ মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে।’’ তিনি বর্তমান সরকারের কাছে গাইবান্ধায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।

সম্মেলন শেষে আগামী সাধারণ নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘আমরাও সংস্কার করে নির্বাচন চাই। আগামী নির্বাচনে প্রস্তুতি নিতে দলের তিন ধরনের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। সমোঝতা, জোট অথবা একক নির্বাচন। তবে অতীতের মতো নির্বাচন চাই না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সুন্দর নির্বাচন চাই। আমরা চাই, সাধারণ মানুষ তাদের ইচ্ছেমতো শান্তিতে নিরাপদে ভোট দিতে পারবে, এ ধরনের পরিবেশ সরকারকে করতে হবে।’’ 

জেলা জামায়াতের আমীর মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ডা. আব্দুর রহীম সরকার, সিনিয়র নায়েবে আমীর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছ সরকার, জেলা সেক্রেটারি জহুরুল হক সরকার, সহকারী সেক্রেটারি সৈয়দ রোকনুজ্জামান প্রমুখ।

দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ পর এ মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর আগে ২০০২ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত নেতা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী এ মাঠে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে বক্তব্য রাখেন। এরপর এ মাঠে আর কোনো প্রকাশ্যে সমাবেশ করতে পারেনি জামায়াত।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: