
নিজস্ব প্রতিবেদক : ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে দেশের সব চা বাগানে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। সিলেটসহ সারা দেশের ১৬৬টি চা-বাগানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে এ কর্মসূচি পালন করছেন সকল শ্রমিকরা। তবে তাদের দাবি মানা না হলে শনিবার (২০ আগস্ট) থেকে আরো কঠোর আন্দোলন শুরু হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সিলেট-এয়ারপোর্ট সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে এক সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) থেকে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন শ্রমিকরা। তবে দাবি মেনে না নেওয়ায় শুক্রবার (১২ আগস্ট) অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় চা-শ্রমিক ইউনিয়ন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও চলে ধর্মঘট।
শ্রমিকরা বলছেন, তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। এখন আর পিছু হঠার সুযোগ নেই। চা পাতা ভর্তা আর মোটা চালের ভাত আর কতো?
গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত সিলেট-এয়ারপোর্ট সড়ক অবরোধ করে রাখেন চা শ্রমিকরা। পরে তারা মালনিছড়া এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরের আম্বরখানা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে এক পথসমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা ও মালনিছড়া চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিপেশ মোদিসহ শ্রমিক নেতারা। এর আগে সকালে সিলেটের বিভিন্ন চা বাগানের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শ্রমিকরা। এছাড়া হবিগঞ্জের মাধবপুরে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা।
এসময় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন,সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ৩০০ টাকা মজুরির দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চা শ্রমিকরা রাজপথ ছেড়ে যাবে না। আগামী শনিবার থেকে অবরোধসহ আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে চা-শ্রমিক, মালিক ও শ্রম অধিদপ্তরের মধ্যে অনুষ্ঠিত দুই দফার বৈঠকে মালিকপক্ষ দৈনিক ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪০ টাকার প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবে শ্রমিকরা রাজি না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শ্রমিকরা মজুরি ৩০০ টাকায় উন্নীত করা ছাড়া কোনো অবস্থাতেই কর্মসূচি স্থগিত করবে না। তবে মালিকপক্ষ বলছে, চা শিল্প অনেক ব্যয়বহুল। তাই শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী মজুরি ৩০০ টাকা করা সম্ভব নয়। এর আগে শ্রীমঙ্গলে প্রথম দফা বৈঠকেও আসেনি কোনো সিদ্ধান্ত। দ্বিতীয় দফা বুধবার রাতের বৈঠকেও সমাধান আসেনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: