
বিদেশবার্তা ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। একদিনেই প্রতি আউন্স সোনার দাম ৫১ ডলারের ওপরে বেড়ে গেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে দামি এ ধাতুটির দাম।
বিশ্ববাজারে সোনার লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে দরপতনের মধ্যে পড়ে সোনা। সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১,৬৪৪ ডলার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই সেখান থেকে কমে ১,৬৩৪ ডলারে নেমে যায়। দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেনের একপর্যায়ে তা আরো কমে ১,৬৩১ ডলারে নেমে যায়।
অবশ্য দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই সোনার দাম বাড়তে দেখা যায়। এতে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১,৬৫৫ ডলার পর্যন্ত ওঠে। তবে তৃতীয় কার্যদিবসে এসে আবার দরপতনের মধ্যে পড়ে সোনা। এতে একপর্যায়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১,৬১৮ ডলারে নেমে যায়।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে এসে সোনার বাজার পতন থেকে বের হওয়ার আভাস দেয়। আর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস সোনার দামে বড় উত্থান হয়। একদিনে প্রতি আউন্স সোনার দাম বাড়ে ৫১.৩৯ ডলার বা ৩.১৫ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়ে ১,৬৮০.৫৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে সোনার দাম বেড়েছে ২.৩৬ শতাংশ বা ৩৬ ডলার।
বিশ্ববাজারে সোনার এ দাম বাড়ার আগে প্রায় একমাস ধরে দরপতন হয়। ফলে মাসের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে এখনো সোনার দাম ২.শূন্য ৬ শতাংশ কম রয়েছে। আর বছরের ব্যবধানে সোনার দাম কম আছে ৭.৫০ শতাংশ।
গত সপ্তাহের আগে বিশ্ববাজারে সোনার টানা দরপতন হওয়ার প্রেক্ষিতে ২৫ অক্টোবর থেকে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। মান অনুযায়ী প্রতি আউন্স সোনার দাম ৮১৭ টাকা থেকে ১,১৬৬ টাকা পর্যন্ত কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১,১৬৬ টাকা কমিয়ে ৮০ হাজার ১৩২ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১,১০৮ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫১৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ হাজার ৫৫২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৮১৭ টাকা কমিয়ে ৫৪ হাজার ৩৫৪ টাকা করা হয়েছে।
এদিকে, সোনার পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপা ও প্লাটিনামের দামেও বড় উত্থান হয়েছে। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম ৮.৩৭ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ২০.৮৩ ডলারে উঠে এসেছে। আর প্লাটিনামের দাম ১.৭৩ শতাংশ বেড়ে ৯৬০.৯৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ে সোনার দাম। মার্চের প্রথমার্ধেই প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর গত কয়েকমাসে কয়েক দফা সোনার দাম ওঠা-নামা করে।
তবে আগস্টের মাঝামাঝি থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। আর সেপ্টেম্বর মাসের বেশিরভাগ সময়জুড়ে সোনার দরপতন হলেও শেষদিকে এসে দাম কিছুটা বাড়ে।
গত ১২ আগস্ট প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১,৮০১.৮২ ডলারে। সেখান থেকে কমতে কমতে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি আউন্স সোনার দাম দুই বছর পর ১,৬৫০ ডলারের নিচে নেমে যায়।
এরপর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তহে এবং অক্টোবরের শুরুর দিকে সোনার দাম কিছুটা বেড়ে প্রায় ১,৭০০ ডলার হয়ে যায়। তবে ৭ অক্টোবরের পর এক আউন্স সোনার দাম আর ১,৭০০ ডলার স্পর্শ করতে পারেনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: