
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণের তথ্য সংগ্রহের সময় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চক মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার দিকে শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুর জাহান লাবনী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সুজন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলাটি করেন।
হামলায় আহত সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি রফিক খান এবং একই পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি খাববাব হোসেন ত্বোহা। তারা দুইজনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলার চক মিরপুর ইউনিয়নের চক রিচরণ এলাকায় সরকারি জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করতে যান দুই সাংবাদিক। এসময় চক মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান।
মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, চক মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন মিয়া, বিএনপি নেতা মো. রফিকসহ নাম না জানা আরো ২০-২৫ জন ছিলেন।
ঘটনার বর্ণনা জানিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক রফিক খান বলেন, আমাদেরকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করেন অভিযুক্তরা। আমাদের কাছে চাঁদাবাজের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী চাওয়া হয়। অস্বীকৃতি জানালে আবারো মারধর করা হয়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান সেখানেই উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনা সম্পর্কে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনার শেষে সেখানে যাই। শফিক চেয়ারম্যানসহ সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের অবস্থার অবনতি দেখে আমি তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জরিত না। বরং আমি সাংবাদিকদের সহযোগীতা করেছি।’
দৌলতপুর উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘অন্যায়কারী যেই হোক আইন তার গতিতে চলবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুর জাহান লাবনী বলেন, ‘মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: