04/20/2025 দুর্ঘটনা না হত্যা তদন্তে ইরান
মো: মনিরুল ইসলাম
২২ মে ২০২৪ ১০:৪১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুুল্লাহিয়ানসহ ৯ আরোহী নিহতের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে ইরান। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাগেরি উচ্চপর্যায়ের একটি দলকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিগেডিয়ার আলী আবদুল্লাহি। দলটি ইতোমধ্যেই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের এলাকায় পৌঁছে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্যের জাল। যদিও বৈরী আবহাওয়াকে এই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে কেউ কেউ মনে করছেন। আবার কূটনৈতিক নানা সমীকরণও থাকতে পারে। সব কিছু আমলে নিয়েই কাজ করছে তদন্ত কমিটি।
নিহত প্রেসিডেন্টের জানাজায় গতকাল ঢল নেমেছিল মানুষের। হাজারো ইরানি পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে জড়ো হন। সর্বস্তরের মানুষ তাদের প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানান। এদিকে আগামী ২৮ জুন ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
দেশটির সরকার সোমবার এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ ৯ আরোহীর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে সমবেদনা জানিয়েছে আমেরিকা। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে এই সমবেদনা জানান। সমবেদনা প্রকাশ করেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটও। খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে পাঠানো এক শোকবার্তায় গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
রাইসির স্মরণে নিরাপত্তা পরিষদে এক মিনিট নীরবতা : ইরানের প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সফরসঙ্গীদের স্মরণে সোমবার এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। তবে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চলতি মে মাসের প্রেসিডেন্ট মোজাম্বিক। জাতিসংঘে নিযুক্ত মোজাম্বিকের রাষ্ট্রদূত পেদ্রো কমিসারিও আফনসো ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ তাঁর সফরসঙ্গীদের স্মরণে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করতে বলেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান। তিনি এই পদক্ষেপকে লজ্জাজনক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসির মৃত্যুতে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তবে পররাষ্ট্রনীতির কোনো পরিবর্তন হবে না বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা। ইরানের কর্তৃত্ব সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির (৮৫) অধীন। তাই রাইসির মৃত্যুতে দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে হয়তো। কিন্তু বৈদেশিক নীতির কোনো পরিবর্তন হবে না। তবে রাইসির আকস্মিক মৃত্যু খামেনির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।