04/20/2025 মিয়ানমার গেল ২০ রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যদের প্রতিনিধি দল
মো: মনিরুল ইসলাম
৫ মে ২০২৩ ১৭:৩৮
কক্সবাজার থেকে : প্রত্যাবাসনের প্রাথমিক প্রস্তুতি ও পরিদর্শনে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে টেকনাফ ছেড়েছে ২৭ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল। যেখানে ২০ জন রোহিঙ্গা, এর মধ্যে ৩জন রোহিঙ্গা নারীও রয়েছে। ১জন দোভাষিসহ বিভিন্ন দপ্তরের ৬ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তা রয়েছেন। পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তার জন্য ২টি বিজিবির স্পিড বোটসহ ১৬ জন বিজিবি সদস্য।
শুক্রবার (৫ মে) সকাল ৯ টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ-মিয়ানমার টেকনাফ ট্রানজিট জেটি ঘাট হতে এই টিম মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি ও সেখানকার পরিবেশ পর্যবেক্ষণে করবেন। তবে তারা একইদিন বিকেলে ফিরে আসার কথা রয়েছে। মূলত প্রত্যাবাসন হলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের যেখানে তাদের রাখা হবে সে জায়গাটি পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর একে একে ৫ বছর কাটিয়ে এখন ৬ বছরে রোহিঙ্গাদের জীবন।
দিনের আলো নিভে গিয়ে সন্ধ্যা হলেই ভর করে আতঙ্ক। কখন গুম হয়ে যায়, আরসাসহ নিজেদের সন্ত্রাসীদের হাতে কখন প্রাণ যায় সেই ভয়ে তটস্থ থাকে সাধারণ রোহিঙ্গারা। তাই রোহিঙ্গারাও ফিরতে চায় নিজদেশে।
ইতোপূর্বে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের তালিকা পাঠানো হয় মিয়ানমারের কাছে। তা থেকে ফেরত নিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথম দফায় প্রায় ১ হাজার ১৪০ জনকে নির্ধারণ করে মিয়ানমার। সেখান থেকে ৪২৯ জনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলো মিয়ানমার। পরে গত ১৫ মার্চ ১৫ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম বাংলাদেশের টেকনাফে এসে ৪৮০ জনের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে ফেরত যায়।
গুঞ্জন উঠেছে, যাচাই-বাছাই করা সেই ১ হাজার ১৮০জনকে দিয়ে শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে। পরিদর্শনের পরপরই শুরু হবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।
এদিকে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল টিম যাচাই-বাছাই করে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান প্রত্যাবাসন। প্রত্যাবাসন এর আগেও হয়েছিলো কিন্তু সেগুলো টেকসই হয়নি। এবার টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করতে সরকার মিয়ানমারের সাথে গভীরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টেকনিক্যাল টিমের যাচাই করে যাওয়া রোহিঙ্গাদের দিয়ে শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরুর আশা তার।
২০১৭ সালে নিজদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশের উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নেয় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ধীরে ধীরে রোহিঙ্গারা যেমন স্থানীয়দের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছে তেমনি রোহিঙ্গারাও আশ্রিত জীবন থেকে বের হয়ে নিজদেশে ফিরতে চায়। প্রত্যাবাসন বা শুক্রবারের পরিদর্শন নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা যদিওবা মুখ খুলেননি এখনও, তবে একটি সূত্র বলছে পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের অনূকুলে। ২০০৫ সাল থেকে বন্ধ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা নানা কারনে সফল হয়নি।