04/20/2025 অনাস্থা ভোটের আগে ইমরান খানের দলের ৫০ মন্ত্রী নিখোঁজ
মো: মনিরুল ইসলাম
২৭ মার্চ ২০২২ ১৮:৫৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ৫০ জনের বেশি মন্ত্রী নিখোঁজ হয়েছেন। ইমরান খানের দলের ওই মন্ত্রীদের গত কয়েক দিন ধরে জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না।
দেশটির ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, নিখোঁজ মন্ত্রীদের মধ্যে ২৫ জন ফেডারেল মন্ত্রী, প্রাদেশিক উপদেষ্টা, বিশেষ সহকারী এবং চারজন প্রাদেশিক মন্ত্রী, চারজন উপদেষ্টা ও ১৯ জন বিশেষ সহকারী রয়েছেন। প্রাদেশিক মন্ত্রীরা আড়ালে গেলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি এখনও দলীয় ফেডারেল মন্ত্রীদের সমর্থন রয়েছে বলে জানিয়েছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। ক্ষমতার ভিতে কম্পন ধরায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি, তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, জ্বালানি মন্ত্রী হাম্মাদ আজহার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পারভেজ খাট্টাক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রাশিদ সেই মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন, যারা ইমরান খানকে রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশটির বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের সময় পিছিয়ে গেছে। দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার ২৮ মার্চ (সোমবার) বিকাল ৪টা পর্যন্ত অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেছেন। সেই সুযোগে ইমরান খান গদি বাঁচাতে দলীয় মিত্রদের সঙ্গে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন।
অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যর্থতার অভিযোগে ২০২০ সাল থেকেই ইমরান খানের পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো। পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধীদল পাকিস্তান পিপলস পার্টি ও মুসলিম লীগ (নওয়াজ) এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
গত ৮ মার্চ রাজধানী ইসলামাবাদে এই দু’টি দলের নেতৃত্বে ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সেখানে বিরোধীরা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে দাবি তোলেন- ‘হয় পদত্যাগ করুন, নয়তো অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হোন’।
গত বছরের মার্চে বিরোধীদের দাবিতে প্রথমবারের মতো অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমরান খান। তবে সেই সময় অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে বিপদ উৎরে যান ক্রিকেট তারকা থেকে প্রধানমন্ত্রীর মসনদে আসীন ইমরান। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে আয়োজিত সেই আস্থা ভোটে জয়ের জন্য ইমরানের ১৭২টি ভোটের প্রয়োজন হলেও তিনি পেয়েছিলেন ১৭৬ ভোট। কিন্তু বিরোধী এমপিদের আবেদনের পর চলতি বছর ফের অনাস্থা ভোটের মুখে পড়তে হচ্ছে ইমরান খানকে। শুক্রবার জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের তারিখ ছিল। কিন্তু শুক্রবারের অধিবেশনে সম্প্রতি জাতীয় পরিষদের মারা যাওয়া সদস্য খায়াল জামান, সাবেক প্রেসিডেন্ট রফিক তারার ও উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য রেহমান মালিকের বিদেহী আত্মার প্রার্থনা করা হয়।
প্রার্থনা শেষে অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করে স্পিকার আসাদ কায়সার বলেন, পাকিস্তান পার্লামেন্টের আইন মেনেই এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সংসদীয় আইন অনুযায়ী, কোনো পার্লামেন্ট সদস্য মারা যাওয়ার পর জাতীয় পরিষদ বা সিনেটের প্রথম অধিবেশনে ওই মৃত সদস্যের উদ্দেশে প্রার্থনার পরই অধিবেশন মুলতবির ঘোষণা দিতে হবে।