04/21/2025 আমরা তিনশ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি : জিএম কাদের
আল আমিন
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:৪৬
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, আমরা তিনশ’ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারো দয়া-দাক্ষিণ্যে নয়, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, নিজস্ব একটি দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। সাধারণ মানুষই দেশের মালিক হবে। দেশের মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করবে কারা-কিভাবে দেশ চালাবে।
তিনি বলেন, যদি ঠিক মতো দেশ না চলে তাহলে দেশের মানুষ আবার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন ও সরকার পরিবর্তনই হচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা। শহীদের রক্তের সাথে আমরা কখনোই বেঈমানী করবো না। আমরা শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করবো।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জিএম কাদের।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ সুশাসন চায়, দেশের মানুষ ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চায়। যেখানে গরীব ও দুখি মানুষের পাশে দাঁড়াবে সরকার। আমাদের সরকার গরীব ও দুখি মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। দেশের সম্পদ লুট করে যারা হাজার কোটি টাকার মালিক, তাদের পাশে দাঁড়ায় সরকার।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়, আমলাতন্ত্রের যোগসাজোসে কিছু ব্যবসায়ী নামধারী লুটপাট করে দেশকে শেষ করে দিচ্ছে। কোন ব্যবসা নেই, কিন্তু হাজার-কোটি টাকা আয় করছে তারা। যারা দেশের মানুষের সম্পদ লুট করছে তাদের জন্যই সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করছে।
জিএম কাদের বলেন, দেশে লুটপাটের রাজনীতি সৃষ্টি হয়েছে। যে যত লুটপাট করতে পারবে, সে তত সম্মানিত ব্যক্তি। যে যত বড় লুটেরা সে তত দেশপ্রেমিক হিসেবে গলায় মালা নিয়ে ঘুরবে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে যারা দেশের জন্য ভালো কাজ করতে চাচ্ছেন, তারা যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু ডলার সংকট সৃষ্টি হয়েছে তাই সরকার সকল জমি কৃষি কাজের আওতায় আনতে উপদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু, যারা কৃষি কাজ করে দেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখছেন, তাদের বাঁচিয়ে রাখতে তেমন কোন উদ্যোগ নেই। কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখলে আমরা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবো না। কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজনে কৃষি ঋণ মওকুফ করতে হবে। ব্যাংক থেকে যারা হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়, তাদের ঋণ সরকার মাফ করে দেয় কিন্তু কৃষকের ১০ হাজার টাকা ঋণ মওকুফ হয় না। লুটেরারা হাজার কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলে আর কৃষকদের টাকায় সেই ব্যাংককে বাঁচিয়ে রাখা হয়। ব্যাংক লুটেরাদের জন্য কোন শাস্তির ব্যবস্থা হয় না, রিশিডিলিউয়িংয়ের মাধ্যমে তাদের উপরের দিকে তোলা হয়। ব্যাংক লুটেরাদের এমপি-মন্ত্রী বানানো হয়। আবার ১০ হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষক ঘরে ঘুমাতে পারে না। সামান্য টাকার জন্য পুলিশ কৃষকদের হয়রানি করছে। কৃষকদের বাঁচাতে যতটা ভর্তুকি লাগে তা সরকারকে দিতে হবে।
এ সময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কৃষিতে নিরব বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। ৭৪’ সালে সাত কোটি মানুষের দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে আর এখন ১৮ কোটি মানুষের দেশে খাদ্য সংকট হচ্ছে না।
তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু উপজেলা পরিষদ সৃষ্টির মাধ্যমে ১৮ জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারা কৃষি ও পশুপালন থেকে শুরু করে দেশের গ্রামীণ মানুষের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট আর দলবাজীর কারণে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাত থেকে মুক্তি চায়।
বিদেশ বার্তা/ এএএ