04/20/2025 হয় জিতব, না হয় মরে যাব: মির্জা ফখরুল
আল আমিন
১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৪:৪২
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান ‘সরকারকে লুটপাট ও গণতন্ত্র হরণকারী’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আপনারা নিরাপদে চলে যান। না হলে পালাবার পথও খুঁজে পাবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই দেশে জনগণ আর কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। এটা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন।’
তিনি বলেন, ‘এই চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এই দেশকে আরেকবার পরাধীনতা থেকে মুক্ত করবার জন্য এই চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড থেকে শুরু হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার আন্দোলন। চট্টগ্রামের মানুষ যে আগুন জ্বালিয়েছে, সেই আগুনের স্ফুলিঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে। আজ থেকে যে আন্দোলন শুরু হলো, সেটি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেব। ফয়সালা হবে রাজপথে।’
বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠের বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। সেই সরকার এখানে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সম্পৃক্ত করে জনগণের গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করবে। এর মধ্য দিয়ে একটি পার্লামেন্ট গঠন হবে যেটা হবে জনগণের পার্লামেন্ট। যারা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তারাই গঠন করবে পার্লামেন্ট। যদি সেই পার্লামেন্ট গঠিত হয় তাহলেই এই দেশের যতগুলো সমস্যা আছে তা দূর করা সম্ভব হবে।’
সমাবেশস্থলে মঞ্চের দুই পাশে টানানো দুটি ব্যানার দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুই দিকে আমাদের পাঁচ ভাইয়ের ছবি টানানো আছে। এগুলো কাদের ছবি- যারা গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার জন্য, মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, জনগণকে অন্যায়-অত্যাচার থেকে মুক্ত করার জন্য শহিদ হয়েছিলেন এগুলো তাদের ছবি। আমরা যখন প্রথম জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, দ্রব্যমূল্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিলাম, তখন ভোলাতে প্রথম নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম। এ ছাড়া ছাত্রদলের নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন প্রধান ও মুন্সীগঞ্জে নিহত হন শাওন ভূঁইয়া।’
সমাবেশ মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘৫০ বছর হয়ে গেছে এই স্বাধীনতার। তখন যেমন যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য, সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের আবার যুদ্ধ করতে হবে। এই লড়াই শক্ত লড়াই। এই লড়াইয়ে আমাদেরকে জিততেই হবে। হয় আমরা জিতব, না হয় মরে যাব। আমরা যদি জয়লাভ করতে না পারি তাহলে এদেশে স্বাধীনতা থাকবে না। আমাদেরকে ‘কলোনীর’ মতো বাস করতে হবে। আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। এটা কেবল বিএনপির দাবি নয়, এটা এখন সমগ্র জাতির দাবি। ’
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন কমিশন বানিয়েছে, যাকে ডিসি-এমপিরা মানেন না। আমাদের মাতা গৃহবন্দি। চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে মুক্তি করার জন্য এই দেশের গ্রামে-গঞ্জে চষে বেড়িয়েছেন। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন। খালেদা জিয়াকে যে মামলায় গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে, সে মামলায় জামিন দেওয়া যায়। কিন্তু বছরের পর আটকে রেখেছে এই সরকার।’
‘আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলছেন- কম খান, কম খরচ করেন। তাহলে আছেন কেন? আমরা ক্ষমতায় এলে চাল-ডাল বিদ্যুতের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করব, বেকারত্ব দূর করব, মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেব। আমরা সেই বাংলাদেশ ফিরে পেতে চাই। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পতন।’
বিদেশ বার্তা/ এএএ