04/20/2025 মীরসরাইয়ে শরৎ সেজেছে কাশফুল আর মেঘের মিতালীতে
মো: মনিরুল ইসলাম
৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:১৪
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : শরৎকাল হলো প্রকৃতির আরেক অনন্য নান্দনিক সুন্দর ঋতু। এই সময়ে কাশফুল আর আর মেঘের মিতালিতে সবুজের সমারোহ মিলিয়ে প্রকৃতি ধারন করে সবচেয়ে মনকাড়া প্রকৃতিতে। মীরসরাই উপজেলার অনেক প্রান্তর জুড়ে প্রকৃতি যেন নতুন সাজে সেজেছে এই শুভ্র শরৎ। কাশফুল, শোভন শুভ্র ফুল। প্রকৃতিতে কাশফুলের আনাগোনা দেখলেই প্রাণবন্ত ঋতু শরৎকালের রবি উদয় ঘটে প্রাণে। শরৎ ও কাশফুল যেন একই সুতায় গাঁথা। কাশফুলের সাথে সাদা মেঘের মিতালি দেখা যায় পুরো শরৎকাল জুড়েই। কিন্তু গ্রামবাংলার অপরুপ শোভা ও সৌন্দর্যের অধিকারী কাশবন এখন আর চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে।
যুগ যুগ ধরে গ্রামের নদ-নদীর ধার, ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল, পুকুর, খাল-বিল, ঈদ গাঁহ মাঠ ও ফাঁকা জায়গায় পথচারীদের দৃষ্টি কাড়ত কাশফুল। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যেত কাশফুলের সৌন্দর্য্যে। ধবল কাশফুল শোভন সুন্দর বলে সবুজ প্রাণ আর মেঘের আকাশ মিলে প্রকৃতি নয়নাভিরাম হয়ে উঠত।
এখন আর সেভাবে দেখা যায় না কাশবন। রুপবৈচিত্রময় চট্টগ্রামের সমৃদ্ধ জনপদ মীরসরাই উপজেলার গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে ফুটে উঠতে দেখা যাচ্ছে কাশফুল। হারিয়ে যাবার পথে হলে ও কোন কোন স্থানে কাশফুলের মেলা প্রকৃতিপ্রেমিক মানুষের মনকে সত্যিই নাড়া দিচ্ছে। মীরসরাইয়ের ঢাকা- চট্টগ্রাম রেলরুটের তালবাড়িয়া ষ্টেশান সংলগ্ন এলাকায় রেল লাইনের দুপাশের কাশফুলের মেলা সেজেছে যেন। ট্রেন এলে এখানটায় কাশফুলের দোল খাওয়া আকাশে মেঘের লুটোপটি যেন অন্যরকম সাজে এখানে প্রকৃতি। আবার করেরহাটের রামগড় সড়কের পাশের কিছু মেঠোপথে, পাহাড়ের কোলে মীরসরাই- নারায়নহাট সড়কের পাশে, মুহুরী প্রকল্প এলাকার কিছু স্থানে শরতের এই কাশবনের খেলা দেখে যে কারো মনন ও মনন ভিন্নরকম তালে মেতে উঠে যেন।
একসময় ফেনী ও মুহুরীর পাড়ে পাড়ে গড়ে ওঠা গ্রামগুলো এভাবেই শরতের সৌন্দর্যকে মুড়িয়ে দিচ্ছে সাদা কাফনে। সাধারণ মানুষের বিনোদন-প্রকৃতিতে দেখার শখ-আহ্লাদ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। কাশবনের ব্যবহার বহুবিধ। চারাগাছ একটু বড় হলেই এর কিছু অংশ কেটে গরু মহিষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কাশ দিয়ে গ্রামের বধূরা ঝাটা, ডালি তৈরি করে আর কৃষকরা ঘরের ছাউনি হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন।
যেখানে এখনো কাশবন আছে সেখানেই প্রকৃতিপ্রেমিকরা সকাল-বিকাল কাশফুলের সাথে মিতালী করতে যাচ্ছে। সেলফি তুলতে দেখা যায় অনেককে।
তালবাড়িয়া ষ্টেশান এলাকায় কাশফুলের সাথে সেলফি তোলাকালে মীর হোসেন বলেন, এখন কাশফুল আগের মত দেখা যায় না তাই কয়েক কিলিমিটার দূরে মোটরসাইকেল নিয়ে এসে এখানে এসে সুন্দর প্রকৃতিতে মনটা যেন শীতল হয়ে গেল। কাশফুল দেখতে আসা অপর প্রকৃতিঅনুরাগি প্রফেসর মনছুর ভূঞা বলেন প্রাকৃতিক এসব নান্দনিক সুন্দর বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন, কারন দিনে দিনে যান্ত্রীকতার প্রভাব থেকে মানুষের মন ও মনন কোমল রাখতে প্রকৃতিকে নিজস্ব রুপে সংরক্ষণে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।