04/21/2025 পদ্মা সেতুর দ্বার খুললেও পরিবহন মালিকদের কর্তৃত্ব রক্ষায় ভাঙ্গায় যাত্রীসেবায় ভোগান্তি
মো: মনিরুল ইসলাম
৩০ জুন ২০২২ ০২:৪৩
ভাঙ্গা থেকে সাইফুল্লাহ শামীম : অনেক চ্যালেঞ্জ ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে নির্মাণ হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেই সেতুর দ্বার খুললেও দুই পাড়ের (ঢাকা-মাদারীপুর-ফরিদপুর) পরিবহন মালিকদের কর্তৃত্ব রক্ষার কারনে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গত পাঁচ দিন ধরে যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এখনও সুফল পাচ্ছেনা যাত্রীরা। সেতু খুলে দেওয়ার প্রথম দিনে (২৬ জুন) ঢাকার সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, এয়ারপোর্ট, রামপুরা,বাড্ডাসহ পুরা ঢাকা শহরে কয়েকটি কোম্পানির বাস এসে যাত্রী আনা নেওয়া করেন।
ভাঙ্গার আশপাশের একাধিক জেলা, উপজেলা থেকে হাজার হাজার যাত্রীরাও আনন্দ উল্লাসে যাতায়াত শুরু করেন। যদিও সরকারী নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা আদায় করা হয়েছিল। তবে একদিন চলার পর ২৭শে জুন থেকে ঢাকার কোন পরিবহন ভাঙ্গায় আসতে দেওয়া হয়নি বলে যাত্রী ও কাউন্টারের লোকেরা অভিযোগ করেন। এতে করে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার ইলিশ পরিবহনের ডাইরেক্টর মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের রোডপারমিটসহ সকল কাগজপত্র থাকা সত্বেও ফরিদপুর, ভাঙ্গা, শিবচর বাস মালিক গ্রুপরা জোর খাটিয়ে আমাদের ভাঙ্গায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা। অথচ ভাঙ্গার কোন গাড়ির ফিটনেস ও কাগজপত্র না থাকলেও তাদের আমরা ঢাকায় ঢুকতে বাধাঁ দেয়নি।
এ দিকে ফরিদপুর মিনিবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক হাজি সোবাহান মুন্সি বলেন, ঢাকা জেলার কোন গাড়ি ফরিদপুর জেলায় প্রবেশ করতে হলে এই এলাকার মালিকদের অনুমতি লাগবে। অনুমতি ছাড়া ভাঙ্গায় কাউন্টার দিতে পারবে না। তবে দুরপাল্লার গাড়ি চলতে পারবে তাতে বাঁধা নাই। সেতু খুলে দেয়ার দিন একটি কোম্পানির গাড়ি গুনগুন পরিবহন চলছে তখন ঢাকার অন্য কোঃ মালিকরা একা কেন চলছে এ নিয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে কোন্দোল লেগে ঢাকার গাড়ি চলছে না। তবে আমাদের লোকাল গাড়িসহ ফরিদপুর থেকে বেশ কিছু গাড়ি গোল্ডোন পরিবহনের ব্যানারে মঙ্গলবার থেকে চলা শুরু করেছে। বাকি কোম্পানি গুলো নিয়ে ঢাকা, ফরিদপুর, শিবচর মালিকদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যাবে।
অন্যদিকে ভাঙ্গা লোকাল বাস মালিক গ্রুপের সদস্য (ফরিদপুর জেলা বড় বাস মালিক গ্রুপের আওতায়) টোকন বলেন, আমাদের ভাঙ্গার ৬৩টি বড় বাস রয়েছে এর মধ্যে কিছু বাসের ফিটনেস না থাকায় আর যে সব বাস ভাল রয়েছে আমরা ঢাকার গুনগুন পরিবহনের সাথে সমন্বয় করে তাদের ব্যানারে ভাঙ্গা থেকে নিয়মিত ঢাকায় চালাচ্ছি। তবে আমাদের কাগজপত্র ঠিক আছে এবং মালিক মালিক সমন্বয় করার চেষ্টা চলছে।
ভাঙ্গার আরেক শ্রমিক ইউনিয়নের (১০৫৫) সভাপতি আবুল কালাম মাতুব্বর বলেন, যাত্রী সেবা উন্নত হবে কি ভাবে? ভাঙ্গার প্রায় ৭০টি বড় গাড়ি রয়েছে যার মধ্যে ৮ থেকে ১০ টি গাড়ির কাগজপত্র ভালো ও রোডে চলার যোগ্য। আর বাকি গুলো ঠেইলা মেইলা চালায়। এসব গাড়ি রোডে চললে যাত্রী উঠবে না নতুন গাড়ি না নামানো পর্যন্ত। এবং যাত্রী সেবাও লাঘব হবে না।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিমউদ্দিন বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দক্ষিণ, পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আর এরা যদি ভোগান্তির শিকার হয় তাহলে দুঃখজনক। প্রয়োজনে মালিকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।