04/20/2025 সৌদিতে কর্মস্থলে বিষাক্ত গ্যাসে দুই বাংলাদেশির মর্মান্তিক মৃত্যু
মো: মনিরুল ইসলাম
২৬ জুন ২০২২ ২০:১২
নিজস্ব প্রতিবেদক : সৌদিতে প্লাম্বারের কাজ করতে গিয়ে দুই বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের নাম জাকির হোসেন ও আবু বকর। তারা দীর্ঘদিন সৌদিআরবে প্লাম্বারের কাজ করতেন।
গত ২৩ জুন দুপুর ৩ টার দিকে কর্মস্থলে দু’জন কয়েক সেকেণ্ডের ব্যবধানে একই স্থানে কাজ করা অবস্থায় মারা যান।
জানা যায়, একজন সৌদির একটি ভবনের ভূগর্ভস্থ একটি কূপের মত ছোট্ট একটি রুম পরিস্কারের কাজ নেন কন্ট্রাক্ট নেন তারা। সৌদি আরবের ভাষাতে উক্ত কাজটিকে বলা হয় গোরফা তাফতিশ। তিনজন মিলে উক্ত কাজে যোগদান করেন তারা। এসিড ঢেলে পরিস্কার করার সময়, প্রথমে এক গ্যালন এসিড ঢালেন আবদুল কাদের নামের তৃতীয়জন ব্যক্তি। এসিড ঢালার পর তার দম বন্ধ হয়ে আসতে শুরু করলে তিনি দ্রুত বেরিয়ে আসেন ওই রুম থেকে। এরপর বাকিদেরও বের হয়ে যেতে বলেন।
তারপর আবদুল কাদের বলেন, আপাতত আমরা কাজ বন্ধ রাখি, যেহেতু সমস্যা হচ্ছে। পরে এসে কাজটা সম্পন্ন করব। কিন্তু জাকির হোসেন জানায়, এটা বড় সমস্যা নয়। যেহেতু কাজ করতেই হবে কাজটা দ্রুত সম্পন্ন করেই চলে যাবো।
পরবর্তীতে এর কিছুক্ষণ পর জাকির হোসেন অবশিষ্ট গ্যালনে এসিড ঢালতে সেখানে যায়। কিন্তু এসিড ঢালতে নামার সাথে সাথে শ্বাসরোধ হয়ে মাটিতে ঢলে পড়েন। এসময় জাকিরকে বাঁচাতে গিয়ে আবু বকর নামের অপর বাংলাদেশি মৃত্যুমুখে পতিত হয়। এভাবেই মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুই বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
কাজ করার সময় তারা কোন ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মুখে কাপড় কিংবা মাস্কও ব্যবহার করেনি। এমনকি শুরুতে সমস্যা দেখলেও তবুও পুনরায় আবার কক্ষে প্রবেশ করে। যার ফলে এমন দুর্ঘটনা হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এসব ভূগর্ভস্থ ছোট কক্ষে অনেকসমত দীর্ঘদিনের বিভিন্ন গ্যাস জমা থাকে। যা মানবদেহে প্রবেশ করলে মৃত্যু হতে পারে। তাই এসব কাজ করার আগে প্রবাসী কর্মীদের আরো সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন অভিজ্ঞরা।
নিহত জাকির হোসেন দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ সৌদি আরবে রয়েছেন। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলার বড়ুয়া উপজেলায়। ডাকঘর ডিমডুল এবং গ্রামের নাম আড়ই। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আলী। ৩৭ বছর বয়েসি জাকির হোসেন ব্যক্তিজীবনে ৯ বছরের এক কন্যা সন্তানের জনক।
অপর নিহত প্রবাসী আবু বকরের বিস্তারিত তথ্য এখনোও জানা যায়নি।